ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নে জওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ বছর ধরে জাল সনদে চাকুরী করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম আবু মীর রায়হান। তিনি কৃষি সহকারী শিক্ষক। জাল সনদের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, আবু মীর রায়হান ওই বিদ্যালয়ে ৫ জুলাই-২০১১ সালে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। গত ২১ মে ২০১৭ তারিখে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল আলম পরিদর্শন করেন। তার পরিদর্শন তদন্ত প্রতিবেদনে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) মীর রায়হানের নিবন্ধন সনদটি ভুয়া প্রমানিত হয়। ঠাকুরগাঁও ডিআইএ ৩৮৫-এস/রাজঃ ৩৯৯ এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিবন্ধন সনদটি সঠিক নয় বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
পরবর্তীতে নিয়োগ বাতিলের জন্য এসএমসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি সুপারিশপত্র দাখিল করেন এবং সরকারী কোষাগার থেকে ৭ লক্ষ ৪২ হাজার ৫৮০ টাকা ফেরত চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালক বরাবরে একটি সুপারিশ করেন।
এ বিষয়ে জওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ধনেশ্বর রায় বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে একটি লিখিত মন্তব্য পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আবু মীর রায়হানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পর পর ২টি মিটিংয়ে আসতে বলা হলেও তিনি অনুপস্থিত। তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মোশারফ হোসেন (সবুজ) বলেন, আমরা একটি লিখিত রিপোর্ট পেয়েছি। সেখানে উল্লেখ করা আছে যে, আবু মীর রায়হান ভুয়া সনদ দেখিয়ে এ যাবৎ চাকরি করে আসছে। সেটি তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। সেটির উপর ভিত্তি করে আমরা পরপর দুটি মিটিং করেছি। এবং তাকে অবগত করেছি, সে কোন প্রকার উপস্থিতি বা উত্তর দেয়নি।
সদস্য ওয়াহেদুর রহমান বলেন, আমি শুনেছি যে, সার্টিফিকেট ভুয়া এবং সে অনুযায়ী আমরা চিঠির মাধ্যমে তাকে অবগত করেছি এখন পর্যন্ত তার কোনো উপস্থিতি পাইনি। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যে ব্যবস্থা নেবে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুনিরুজ্জামান বাবলু বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদন পেয়েছি। প্রতিবেদন চিঠিতে মীর রায়হানের ভুয়া নিবন্ধন সনদের বিষয়ে অবগত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে বিষয়টি সকলকে অবগত করেছি এবং দুটি মিটিং করেছি কোন মিটিংয়ে মীর রায়হান উপস্থিত হয়নি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে উপর মহলের চাপের কারণে আপাতত রেজুলেশন করে মীর রায়হানের বিল আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক আবু মীর রায়হানের সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তার কোন পাত্তাই পাওয়া যায়নি।
এদিকে, জাল সনদের বিষয়টি নিশ্চিত করতে ঠাকুরগাঁও ডিআইএ’কে বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :