নকশা এলেও গতিহীন সচিবালয় স্থানান্তর প্রকল্প


নিজস্ব প্রতিবেদক, অধিকার কণ্ঠ প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২, ২০২১, ২:৩৩ অপরাহ্ন / ২০২
নকশা এলেও গতিহীন সচিবালয় স্থানান্তর প্রকল্প

লুই আই কানের আঁকা জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নকশা পাওয়া গেছে চার বছর আগে।  তারপরও ঢাকার শেরে বাংলানগরে জাতীয় সচিবালয় নির্মাণ প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি নেই। মূল নকশা না থাকায় ২০১৫ সালের ১৩ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ঢাকার শেরে বাংলানগরে জাতীয় সচিবালয় নির্মাণ’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সেসময় পরামর্শ দেওয়া হয়, মূল নকশা দেশে এনে সে অনুসারে প্রকল্প পুনর্গঠনের। ফলে প্রকল্পটি একনেক সভা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ জাতীয় সচিবালয় নির্মাণের লক্ষ্যে লুই আই কানের মূল নকশা যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগ্রহ করা হলেও থেমে আছে প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নের কাজ।

একনেক সভার সিদ্ধান্ত ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের করা জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নকশা দেশে আনা হয়েছে। পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির আর্কাইভ থেকে ৪১টি বক্সে নকশাগুলো এনে জাতীয় সংসদের আর্কাইভে রাখা হয়। অথচ প্রকল্পের নতুন প্রস্তাবনা এখনো পরিকল্পনা কমিশনে আসেনি।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) কাজী জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকার শেরে বাংলানগরে জাতীয় সচিবালয় নির্মাণ প্রকল্পটি আর আমাদের কাছে (পরিকল্পনা কমিশন) আসেনি। আগের যে স্ট্যাটাস সেইভাবেই আছে। এর বেশি কিছু আমরা জানি না।

৫ বছর আগে ২০১৫ সালের ১৩ মে চার বছরে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একনেক সভায় প্রস্তাবিত প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ২০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৩২ একর জমিতে চারটি ব্লকে ভাগ করে জাতীয় সচিবালয় কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিলো। দুটি বড় ব্লকে ৩২টি বড় মন্ত্রণালয় এবং দুটি ছোট ব্লকে ১৬টি ছোট মন্ত্রণালয়কে স্থানান্তরের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল। যেখানে থাকবে অডিটোরিয়াম, সম্মেলন কেন্দ্র, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, মসজিদ, কার পার্কিং ইত্যাদি।

প্রাথমিক পরিকল্পনায় আরও ছিল, জাতীয় সংসদ ভবনের উচ্চতা ১৫০ ফুট। সে ক্ষেত্রে সচিবালয় নয় তলার বেশি হবে না। সংসদ ভবনের উচ্চতা সীমার বিষয়টি রক্ষার্থে বিশ্বের উন্নত দেশের মতো ভূ-গর্ভস্থ বা কয়েকটি ফ্লোর মাটির নিচে করারও পরিকল্পনা ছিল। তবে লুই আই কানের নকশা অনুসারে ডিপিপি পুনর্গঠন করা হলে সব কিছুরই পরিবর্তন হবে।

তবে প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ-১) নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রকল্পের বিষয়ে নতুন কিছু আমার জানা নেই। ’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের নকশা সংশোধন করেছে স্থাপত্য অধিদফতর। কারণ, ইতোমধ্যে আগের চেয়ে জমি কমে গেছে ১০ একর। এ জমিতে লুই আই কানের নকশা বহির্ভূত কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। পাকিস্তান আমলে ১৯৬৪ সালে ১৫ মিলিয়ন ডলারের অনুমিত ব্যয় ধরে লুই কানের নকশা অনুযায়ী সংসদ ভবন কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৮২ সালে।