বিএনপি-আ’লীগ গণতন্ত্রকে হাতকড়া পরিয়েছে : জিএম কাদের


রাজনীতি ডেস্ক, অধিকার কণ্ঠ প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২, ২০২১, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন / ২৯৭
বিএনপি-আ’লীগ গণতন্ত্রকে হাতকড়া পরিয়েছে : জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের হাতে হাতকড়া পরিয়ে দিয়েছে। ত্রিশ বছরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির শাসনামলের চেয়ে জাতীয় পার্টির শাসনামলে সুশাসন বেশি ছিল। জাতীয় পার্টির আমলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছিল, তাই নেতাকর্মীরা বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারে। শুক্রবার (১ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি বনানী কার্যালয়ে পার্টির ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার পদ্ধতি থেকে সংসদীয় পদ্ধতি চালু করেছে। সংবিধান সংশোধন করে তারা ৭০ ধারা যোগ করেছে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যে দল সরকার গঠন করে সেই দলের প্রধানই হন সংসদীয় দলের প্রধান এবং সরকারপ্রধান। সাংসাদরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেন না। তাই সরকারদলীয় প্রধান যা চান তাই সংসদে পাস হয়। আবার সরকারপ্রধান যা চান না তা সংসদে পাস হয় না। এতে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে এবং সরকারের জবাবদিহিতা থাকে না। নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতায় দুর্নীতি বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোট ৫ বার বিশ্বে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ৩০ বছর ধরে ৭০ ধারা অপব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতা ভোগ করেছে। সংসদ যেখানে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করবে, সেখানে সরকারই সংসদকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের কোনো পথ আর নেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা দুর্নীতি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি এখন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ডাক-চিৎকার করছে। কিন্তু বিএনপি কি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়েছে কখনো? বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মহাসচিবদ্বয় প্রায়ই বিভিন্ন ইস্যুতে বাহাস করেন। কিন্তু দুই দলই গণতন্ত্রের হাতে হাতকড়া পরিয়ে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক স্বাদ নষ্ট করেছে।

তিনি বলেন, শুরু থেকেই জাতীয় পার্টি গণমানুষের দল। ’৯১ সালের নির্বাচনে দেশের সরকার, প্রশাসন, গণমাধ্যমসহ সবকিছুই জাতীয় পার্টির বিপক্ষে ছিল। নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে প্রচার চালাতে দেওয়া হয়নি। নেতাকর্মীদের জেলে পাঠিয়ে অবিচার করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না। সেই অবস্থাতে দেশের জনগণ জাতীয় পার্টিকে ৩৫টি আসনে নির্বাচিত করেছে। পল্লিবন্ধু দুবার পাঁচটি করে আসনে নির্বাচিত হয়ে প্রমাণ করেছেন জাতীয় পার্টি শুরু থেকেই জনগণের রাজনৈতিক শক্তি। বিএনপি ১৪৪ ধারা জারি করে সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি। তারা চেয়েছিল জাতীয় পার্টি যেন ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় এখনো টিকে আছে। আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি অনেক সম্ভাবনাময় দল।

সভায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এসএম ফয়সল চিশতী, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, কারি মো. হাবিবুল্লাহ বেলালী, উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা আল মাহমুদ, সালমা হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আহসান শাহজাদা, জাতীয় মহিলা পার্টির সদস্যসচিব মেহেরুন্নেসা খান হেনা পন্নি, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন, জাতীয় মোটর শ্রমিক পার্টির সভাপতি মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মীর সামছুল আলম লিপটন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া প্রমুখ।