মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জাতিসংঘ বলেছে, বিশ্ব সবই দেখছে। জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারকে অং সান সু চি ও অন্য কর্মকর্তাদের মুক্তি এবং সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী মানুষের প্রতি সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক উপ-হাইকমিশনার নাদা আল নাশিফ বলেন, ‘বিশ্ব সবই দেখছে। মিয়ানমারের প্রতিবাদী জনগণের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি কারো দৃষ্টির বাইরে থাকবে না।’
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারী) জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের জরুরি বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
নাশিফ বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী কিংবা প্রাণঘাতী নয়- নির্বিচারে এমন কোনো অস্ত্র ব্যবহার গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’
৪৭ সদস্যের জেনেভা ফোরাম বিনা ভোটে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যদিও রাশিয়া ও চীন এই প্রস্তাবে একমত হয়নি। তবে মিয়ানমার দূত বলেছেন যে ভোট ছাড়া এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকারীদের দ্বারা এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ওই প্রস্তাবে মিয়ানমারের ওপর শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত তদন্তকারী অফিসার অ্যানড্রু টমাস জানিয়েছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উচিত অবিলম্বে মিয়ানমারের উপরে আর্থিক, সামরিক এবং সফর সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা।
তার কথায়, ‘বিভিন্ন রিপোর্ট ও ছবি থেকে আমরা এই প্রমাণ পেয়েছি যে গত কয়েক দিনে বিক্ষোভ ঠেকাতে সেনার নির্দেশে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রয়োগ করেছে পুলিশ। যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এই পরিস্থিতিতে আমার প্রস্তাব, অবিলম্বে মিয়ানমারের সেনা কর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।’ প্রায় একই বার্তা দিয়েছেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব। তিনিও জানিয়েছেন, সেনা অভ্যুত্থানের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাদের সরকার মিয়ানমারে সুষ্ঠু গণতন্ত্র ফেরানোর দাবি জানিয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। দেশটির রাজনৈতিক নেতা, সরকারের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছে সাধারণ মানুষ কিন্তু তাদের ওপর সামরিক বাহিনী হামলা চালাচ্ছে বলে খবর বের হয়েছে। এরপরই জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এই হুঁশিয়ারি এলো।
এর আগে নিউজিল্যান্ড মিয়ানমারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এছাড়া মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আপনার মতামত লিখুন :