মুজিবনগরে দ্রুতগতিতে চলছে “স্বাধীনতা সড়ক” নির্মাণ কাজ


সংবাদদাতা, মেহেরপুর প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২১, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন / ৫০৩
মুজিবনগরে দ্রুতগতিতে চলছে “স্বাধীনতা সড়ক” নির্মাণ কাজ

স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুরের মুজিবনগর (তৎকালীন বৈদ্যনাথতলা) থেকে ভারতের নদীয়া পর্যন্ত ঐতিহাসিক সেই সড়ক। যে সড়ক ধরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল জাতীয় চার নেতা মুজিবনগরের আম্রকাননে এসে শপথ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রথম সরকারের। জাতীয় চার নেতার সাথে এই সড়ক ধরে এসেছিলেন অসংখ্যা বিদেশী সংবাদকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা।
স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরে হলেও মুজিবনগর-কলকাতা “স্বাধীনতা সড়ক” নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এক কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নির্মাণ কাজ। ২৬ মার্চ উদ্বোধনের লক্ষ্যে বেশ দ্রুত গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছে সড়ক নির্মাণ কাজ। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর।

চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা মার্চের প্রথম দিকে রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন ঠিকাদার শাহাবাজ উদ্দিন। ২৬ মার্চ উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের অংশে খুব দ্রুত গতিতেই কাজ চলছে।

মুজিবনগর থেকে ভারতের নদীয়ার কৃষ্ণনগর সড়কের প্রায় ৫’শ মিটার ইটের হিয়ারিং বন্ড রয়েছে বাংলাদেশ অংশে। এই ৫’শ মিটার সড়ক পাকাকরণের কাজ করা হচ্ছে।

এছাড়াও মুজিবনগর ইমিগ্রেশন ও কাস্টম চেকপোষ্ট স্থাপনের কাজও চলমান। এই সড়ক বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন দু-দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে তেমনি মেহেরপুরবাসীর জন্য উন্মেচিত হবে অর্থনীতির নতুন দিগন্ত। বিশেষ করে মুজিবনগর সীমান্ত এলাকার মানুষের জন্য খুলবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দুয়ার।

সীমান্ত এলাকা হওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে আছে এই এলাকার মানুষ। কৃষিনির্ভর এই এলাকার অর্থনীতির মুল উৎস হলো কৃষি। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও কম না। তাই স্বাধীনতা সড়ককে ঘিরে একগুচ্ছ কর্মসংস্থানের সপ্ন দেখছেন এই এলাকার বেকাররা। এটিকে ঘিরেই নতুন দিনের সম্ভাবনা দেখছেন মেহেরপুরের মানুষরা।

স্বাধীনতা সড়কের পাশেই বাড়ি ৬৫ বছরের বৃদ্ধ ছাবদার আলীর। জাতীয় চার নেতার আগমনের সাক্ষী তিনি। ছাবদার বলেন, আমরা কখনো ভাবিনি এখান দিয়ে সড়ক হবে। এখন সেটি হচ্ছে দেখে খুবই ভাল লাগছে। নতুন ইতিহাস হচ্ছি।

মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইদুর রহমান, রিপন আলীসহ বেশ কয়েকজন বলেন, স্বাধীনতা সড়ক বাস্তবায়িত হলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হবে। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরে হলেও উন্নয়নের আলো জ্বলতে যাচ্ছে আমাদের এলাকায়। এই সড়ককে ঘিরে ব্যাপক কর্মসংস্থানের আশা করছেন তারা।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, সড়কটি বাস্তবায়িত হলে সেবা খাতের উন্নতি ঘটবে। নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। শুধুমাত্র এলাকার মানুষের কৃষি খাতের উপর যে নির্ভরতা সেটাতো কমবেই সেই সাথে বহুমুখি অর্থনীতির রুপান্তর ঘটবে।