রোগীদের অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে রংপুরের মেডিকেল পূর্বগেট এলাকায় একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে রোগীদের স্বজন ও স্থানীয়রা। এ সময় পুলিশে খবর দেয়া হলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। পুলিশ কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিলেও অভিযুক্তরা সটকে পড়েছে।
লোহার পাইপ দিয়ে এক রোগীকে মারপিট করার খবর পেয়ে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই রোগীর কয়েকজন স্বজন প্রধান মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নামে ওই প্রতিষ্ঠানটিতে যান।
এ সময় প্রায় সব রোগী চিকিৎসার নামে নিজেদের ওপর চলা শারীরিক নির্যাতনের ফলে সৃষ্টি হওয়া ক্ষত দেখিয়ে উদ্ধারের আঁকুতি জানান।
রোগিরা জানান, লোহার পাইপ দিয়ে মারপিট করায় অনেকের পিঠ, কোমর, হাঁটুতে রক্তাক্ত জখম আছে। নির্যাতনের সময় অনেককে উলঙ্গ করে গোপনাঙ্গ ও চোখে মরিচের গুড়া দেয়ারও অভিযোগ করে তারা। এমনকী মল-মূত্র খাওয়ানোর অভিযোগ করেছে কেউ কেউ।
চিকিৎসার নামে চলা লোমহর্ষক নির্যাতনের খবর পেয়ে অন্যান্য রোগীর স্বজনরাও রাতেই ছুটে এসে কেন্দ্রের অভিযুক্ত লোকজনের ওপর চড়াও হয়।
এ সময় পুলিশে খবর দেয়া হলে অভিযুক্তরা কৌশলে পালিয়ে যায়।
এদিকে পুলিশ গিয়ে শারীরিক নির্যাতনের আলামত পাওয়ায় রোগীদের সেখান থেকে উদ্ধার করে এবং উপস্থিত স্বজনদের কাছে তাদের হস্তান্তর করে।
এসময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকেও কর্মকর্তারা আসেন। ১০ জন রোগীর চিকিৎসার অনুমতিসহ এক সময় প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স থাকলেও তা নবায়ন করা হয়নি বলে জানান কর্মকর্তারা।
সেখানে ২১ জনকে গাঁদাগাদি করে ছোট্ট দুটি ঘরে মেঝের ওপর রাখা হতো। থাকার ও রান্নাঘরসহ পুরো কেন্দ্রটির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখতে পান কর্মকর্তারা। মাদকাসক্তি নিরাময়ের নামে অপচিকিৎসাসহ বেশকিছু অনিয়ম থাকায় কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
রংপুর মহানগর পুলিশের অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শহিদুল্লাহ কায়সার জানান, পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :