সাংবাদিকরা দেশ ও জাতির কথা বলতে গিয়ে অব্যাহতভাবে প্রতিনিয়ত নানান নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় দেশে সাংবাদিক নির্যাতন দিন দিন বেড়েই চলছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হচ্ছে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রংপুর প্রেসক্লাব চত্ত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সাংবাদিক নেতার উক্ত মন্তব্য করেন।
নির্যাতিত সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক ও সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফাসহ দেশে সাংবাদিকদের নির্মম নির্যাতনের প্রতিবাদে রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুর, সিটি প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাব, তাজহাট প্রেসক্লাব, দৈনিক আমাদের কন্ঠ রংপুর ব্যুরো অফিস, বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়ন (বসকো)সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে ২ ঘন্টা ব্যাপী বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সিনিয়র সাংবাদিক ও দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা নির্বাহী সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বাবলার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাছরাঙ্গা টিভি রংপুর অফিস ইনচার্জ ও রংপুর প্রেসক্লাব সাধারণ সাধারণ সম্পাদক রফিক সরকার, একাত্তর টিভি রংপুর অফিস প্রধান ও রিপোর্টার্স ক্লাব সাধারণ সম্পাদক শাহ বায়োজিদ আহম্মেদ, দৈনিক আমাদের কন্ঠ রংপুর অফিস প্রধান ও দৈনিক প্রথম খবরের নির্বাহী সম্পাদক তাজিদুল ইসলাম লাল, মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি বাবলু নাগ, রংপুর সিটি প্রেসক্লাব যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান বাবলু, রংপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি যুগ্ম সম্পাদক রনজিত দাস, বাংলাদেশ তৃণমুল সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটি সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম, দৈনিক সাইফ এর স্টাফ রিপোর্টার কবি ও সাংবাদিক হায়াত মাহমুদ মানিক, সাবেক ছাত্রনেতা পলাশ কান্তি নাগ, পীরগঞ্জের আলোর সংবাদ প্রকাশক ও সম্পাদক আঃ করিম সরকার, রংপুর ফটো জার্নালিষ্ট এ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ও কালের কন্ঠ রংপুর আলোকচিত্রী আদর রহমান, বদরগঞ্জ প্রেসক্লাব সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল আলম আপন, ছান্দসিক সাধারণ সম্পাদক ও সাহিত্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মমিন উদ্দিন পাটোয়ারী, তৃণমুল সাংবাদিক সোসাটি সাধারণ সম্পাদক এসএম ফজলুল করিম লিটন, সন্ধ্যাবানী রংপুর ব্যুরো প্রধান এজাজ আহম্মেদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা দাবী করেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। করোনাকালীন দুর্যোগ মুহুর্তে সাংবাদিকরা নিবেদিতভাবে কাজ করেছেন। তারা ঠিকমত বেতন পাননা। তারপরেও তারা দেশের হয়ে সরকারের উন্নয়ন ও প্রগতির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। কোন দুর্নীতি এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হলেই তাদের উপর নেমে অমানষিক নির্যাতন। তারা নিবেদিতভাবে মাঠে-ঘাটে কাজ করছে, আবার নির্যাতনের শিকারও হচ্ছে, এটা মেনে নেয়া যায় না।
বক্তারা আরও বলেন, সাংবাদিকদের দুর্বল ভাববেন না। সাংবাদিক সমাজ জেগে উঠলে নির্যাতনকারী, হামলাকারীরা টিকতে পারবেন না। সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং তাদের পাশে থাকতে হবে। সাংবাদিকরা আহত হচ্ছেন কেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপির কাছে জবাব চাই। সাংবাদিকরা গণমানুষের কথা বলেন, সরকারের উন্নয়ন ও নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেন। এতে জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকেন।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে আলোচিত এই দুইজন নির্যাতিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা করেছেন দুই পুলিশ কর্মকতাসহ কয়েকজন।
মানববন্ধন থেকে সকল মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার, তাদের উন্নত চিকিৎসা, ক্ষতিপুরণসহ জান-মালের নিরাপত্তার দাবিও জানানো হয়।
মানববন্ধন সঞ্চালনায় ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট প্রেসক্লাবের আহবায়ক এসএম জাকির হোসাইন।
এসময় রংপুরের বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক্স, অনলাইন নিউজপোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এবং পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা, রংপুরের সাংবাদিক আঃ করিম সরকার, বদরগঞ্জের সাংবাদিক আশরাফুল আলম আপন, বগুড়ার ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার দুই সাংবাদিকসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিক নির্যাতন, মামলা ও হামলার শিকার হচ্ছেন। এসব ঘটনায় বিভিন্ন সময় সাংবাদিকরা মামলা দায়ের করেছেন কিন্তু বিচার ব্যবস্থায় ধীরগতি থাকায় নির্যাতনকারীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :