রংপুর মহিলা ফোরামের রোকেয়া দিবস পালন


রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৯, ২০২০, ১:৪০ অপরাহ্ন / ৪৬৫
রংপুর মহিলা ফোরামের রোকেয়া দিবস পালন

রোকেয়া দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল সকাল ১১ টায় নগরে সুমি কমিউনিটি সেন্টাল হল রুমে আলোচনা সভা ও সভা শেষ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সংগঠক ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি রিনা মুরমু’র সন্চলয়নায় সভায় সভাপতিত্বে করেন সংগঠনের জেলা সংগঠক গোলাপী বেগম।

আলোচনা করেন বাসদ জেলা আহবায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুস, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আলী রায়হান সরকার, ছাত্র ফ্রন্ট নগর সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক মৌসুমী আক্তার প্রমূখ। রোকেয়া মূর্যালে সভার পূর্বে সকাল ১০টায় বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজের রোকেয়া মূরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান।

কমরেড আব্দুর কুদ্দুস বলেন, রোকেয়া তৎকালীন সমাজে কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। রোকেয়ার মৃত্যুর ৮৭ বছর বছর পরও তাঁর স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সারাদেশে নারী-শিশু নির্যাতন এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদের সম্প্রসারণ ঘটেছে।

তিনি আরো বলেন, অতীতের জোট মহাজোট সরকার ক্ষমতা থাকা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় রাজাকার স্বৈরাচার ও মৌলবাদ সাম্প্রদায়িক সকল শক্তিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ায় আজ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী সম্প্রদায়িক শক্তি মনীষীদের ভাস্কর্য ভাঙ্গার আস্ফালন দেখানো সাহস পাই। সেই থেকে মুক্তি পেতে জোট-মহাজোটের বাইরে বামপ্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে হবে। এই সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনকে বেগবান করতে রোকেয়ার চেতনাকে ধারণ করে দেশের সমগ্র নারী সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে যারা আস্ফালন দেখাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।

বেরোবি সহকারী অধ্যাপক আলী রায়হান সরকার বলেন, এখনও নারীদের সমকাজে সমমজুরি নেই, নারীদের গৃহস্থালী কাজের আর্থিক মূল্য এখনও জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সমবেতনে ৬ মাস মাতৃকালীন ছুটিও কার্যকর নেই। এছাড়া ও নারীকে মানুষ হিসেবে মর্যদা দেয়ার দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্রীয় আয়োজন নেই। উপরন্ত নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীদের পণ্য রূপে উপস্থাপন করা হয়। গ্রামে-গঞ্জে পাঠাগার, খেলাধুলার জন্য মাঠ, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে নারীদের সম্পর্কে অশালীন কূরুচিপূর্ণ মন্তব্য হেয় করা হচ্ছে। শিক্ষিত-নিরক্ষর যুবক তুরুণেরা বেকারত্বের অভিশাপে মাদকসহ সমাজে নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে দরকার নারী পুরুষের মিলিত সংগ্রাম।

অন্যান্য বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড় সমতলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কারখানায় ঘরে বাহিরে শিশু ধর্ষণ, গণধর্ষণ, অপহরণ নির্যাতন বেড়েই চলছে, এসব নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নারী পুরুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকলকে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহবান জানান।