রাজবাড়ীর কালুখালীতে গ্রাম্য সালিশে সাজা হিসেবে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে কালুখালী থানা পুলিশ।
আটককৃত ইউপি চেয়ারম্যান কালুখালী উপজেলার ৭ নং সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম আলী ও একই ইউনিয়নের বড়বিলা গ্রামের শুটকি মন্ডল এর পুত্র রায়াহন।
কালুখালী থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, রবিবার (২৫ জানুয়ারী) বিকেলে সাওরাইল ইউপি’র চর পাতুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশে চর পাতুরিয়া গ্রামের ইমান আলী শেখ এর পুত্র মোঃ রাশেদুল শেখকে দোষী সাব্যস্ত করে ১’শ জুতার আঘাত ও জরিমানা করা হয়।
এতেও চেয়ারম্যানের মনের তুষ্টি না মেটায় আরও শাস্তি হিসেবে মধ্যযুগীয় কায়দায় তার পুরুষাঙ্গে রশি দিয়ে ইট বেঁধে স্কুল মাঠে প্রদক্ষিণ করায় এবং তার শরিরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে। ফলে রাশেদের পুরুষাঙ্গে রক্তপাত হতে থাকে।
এসময় চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং এ ঘটনা পুলিশকে না জানানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। পরে রাশেদুলকে তার নিজ বাড়ীতে চেয়ারম্যানের লোকজন দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেন।
রাতে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে কালুখালী থানা অফিসার ইনচার্জ সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাশেদুলকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে রাশেদুল এর পিতা ইমান আলী বাদী হয়ে কালুখালী থানায় এজাহার দিলে পুলিশ সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম আলী ও তার সহযোগী রায়হানকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন।
সাওরাইল ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, এমন ঘটনা চেয়ারম্যানের নতুন নয়। তার বিরুদ্ধে এরকম একাধীক ঘটনা রয়েছে। প্রভাবশালী হিসেবে এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি।
এ ব্যপারে কালুখালী থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, এটি একটি অমানবিক ঘটনা। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী ও রায়হানকে গ্রেফতার করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :