সুনামগঞ্জে ১১ গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ পানিকষ্টে


সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২১, ১২:৪৬ অপরাহ্ন / ৪৯৮
সুনামগঞ্জে ১১ গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ পানিকষ্টে

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের দুই শতাধিক অগভীর নলকূপ থেকে পানি উঠেনা। এতে ওই ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

ভুক্তভোগী গ্রামগুলো হলো-কৃষ্ণনগর, বানীপুর, কোনাগাঁও, ঢালাগাঁও, নলুয়া, বাঘমারা, তেরাপুর, বেরীগাঁও, পার্বতীপুর, ষোলঘর, ভৈষারপাড়া। এই দুভোর্গের কারণ হিসেবে তেরাপুর, বৈশাপাড়া ও কৃষ্ণতলা তিনটি বিএডিসির সেচ পাম্পকে দায়ী করছেন এসব গ্রামের মানুষ। এই পাম্পগুলো বন্ধ থাকলে আবার পানি এলেও এসব পানিতে থাকে আয়রণ।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, নলকূপগুলোতে পানি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানির সমস্যায় ভুগছেন তারা। গত দুই বছর আগে তেরাপুর এলাকায় সোলার সেচ পাম্প স্থাপন করা হয়। ওই সময় থেকে সাধারণ নলকূপে পানি ওঠার সমস্যা শুরু হয়। এবার শুকনো মৌসুম শুরু হতেই নলকূপে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। পাম্প বন্ধ থাকলে মাঝে মধ্যে সামান্য পরিমাণে পানি ওঠে। এই পানিতেও রয়েছে আয়রণ। তাই পুকুর ও বিলের পানি ফুটিয়ে ফিটকিরি মিশিয়ে পান করছেন তারা। এ কারণে নানান রোগে ভুগছেন এলাকাবাসী। পুকুর ও বিলের পানি ফুটিয়ে ফিটকিরি দিয়ে বেশিরভাগ পরিবারে খাবার পানি হিসেবে আর সাংসারিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুকুর ও বিলের পানি। এ কারণে পেটের পীড়া, চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।

পার্বতীপুর গ্রামের বাসিন্দা জালাল মিয়া জানান, সোলার সেচ পাম্প চালু করার পর থেকে নলকূপে পানি উঠতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

সুরমা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রামের অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। এই সমস্যা সমাধানে এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন জরুরি। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত হবে খুব দ্রুত গভীর নলকূপ স্থাপন করা। না হলে মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।

বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।

সুনামগঞ্জ বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী হুসাইন মোহাম্মদ খালিদুর জানান, তেরাপুর, বৈশাপাড়া ও কৃষ্ণতলা এলাকায় ৩টি বিএডিসি’র সেচ পাম্প রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে দুটি চলমান আর এগুলো খুবই ছোট সৌরশক্তিচালিত। তাই, এর কারণে নলকূপের পানির কোন সমস্যা হবার কথা নয়।

সুনামগঞ্জের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাস পর্যন্ত পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারণ নলকূপে পানি ওঠে না। বৃষ্টি হলে অবশ্যই পানি উঠবে। ওইসব এলাকায় ২৬টি গভীর নলকূপ সাবমারসিভল পাম্পসহ স্থাপন করার জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।