স্কুল থেকেও বেতন-ভাতা তুলেন ভাইস-চেয়ারম্যান রেহানা


সংবাদদাতা, বরিশাল প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৬, ২০২১, ৮:৩০ পূর্বাহ্ন / ৫২২
স্কুল থেকেও বেতন-ভাতা তুলেন ভাইস-চেয়ারম্যান রেহানা

বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস-চেয়ারম্যান রেহানা বেগম। নির্বাচিত হওয়ার আগে ছিলেন কাগাশুরা মাধমিক বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষিকা। ২০০৮ সালের ১৭ নভেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে নারী ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন রেহানা বেগম। উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত হলে চাকরিজীবিদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তোলার সুযোগ নেই। উপজেলা পরিষদ আইনে এ বিষয়ে পরিষ্কার করে নির্দেশনাও দেয়া আছে। তবে সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে স্কুলের বেতন তুলে নিচ্ছেন তিন (২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮)  মেয়াদে নির্বাচিত ভাইস-চেয়ারম্যান রেহানা বেগম।

উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ (৩০ জুন ২০০৯ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুসারে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে এই বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের ১৫-০১-১৯৮৬ তারিখে জারিকৃত নির্দেশনা মানতে হবে।

আর নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক অথবা অন্য কোনো শিক্ষক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হইলে সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাকরি হইতে পদত্যাগ না করিয়া সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের নিকট থেকে বিনা বেতনে ছুটি মঞ্জুর সাপেক্ষে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বহাল খাকতে পারবেন। এই নির্দেশনাটি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বেলায়ও প্রযোজ্য হইবে।’

সূত্র জানায়, রেহানা বেগম উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় রাজস্ব তহবিল থেকে ২০১১-২০১৯ পর্যন্ত ১৯ লাখ ২০ হাজার ৪৬৮ টাকা উত্তোলন করেন। একই সঙ্গে কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত দেখিয়ে স্কুল থেকেও সরকারি-বেসরকারি বেতন ভাতা বাবদ ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ১৭৩ টাকা উত্তোলন করে আত্মাসাৎ করেন।

ভাইস-চেয়ারম্যান রেহানা বেগমের বেতন-ভাতা উত্তোলন করার অভিযোগ- তদন্তে সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

দুদক’র উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল লতিফ হাওলাদার সম্প্রতি রেহানা বেগমের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দুদক’র প্রধান কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে আইনকে অবজ্ঞা করে অনৈতিকভাবে রাজস্ব তহবিল ও স্কুল থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করায় রেহানা বেগমের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪২০/৪০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ৫(২) দুটি মামলা করার জন্য সুপারিশ করা হয়।

দুই জায়গা থেকেই বেতন নিচ্ছেন স্বীকার করে রেহানা বেগম জানান, এটা বৈধ। এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন। সেখানে তার দুই জায়গা থেকেই বেতন-ভাতা নেয়াকে বৈধ বলেছে। বাড়তি কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে দুদক’র কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।