নড়াইলে স্ত্রী হত্যা : আদালতে স্বামীর স্বীকারোক্তি


জান্নাতুল বিশ্বাস. নড়াইল প্রকাশের সময় : নভেম্বর ৬, ২০২২, ৭:৫০ পূর্বাহ্ন / ৩১৬
নড়াইলে স্ত্রী হত্যা : আদালতে স্বামীর স্বীকারোক্তি

নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের সড়াতলা গ্রামে নিজের ঘরের বিছানায় গলা কেটে ও পুড়িয়ে আছিয়া বেগমকে (২২) হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন নিহতের স্বামী রনি শেখ ও তার বন্ধু প্রধান সহযোগী আব্বাস ফকির। শনিবার (৫ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে নড়াইলের আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাÐে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন।
শনিবার (৫ নভেম্বর) ভোর রাতে রনি শেখ ও আব্বাসকে হত্যাকাÐের পনের ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (তদন্ত) ওবায়দুর রহমান জানান, আছিয়ার স্বামী রনি শেখকে নড়াইল জেলার কালিয়া থেকে এবং রনির বন্ধু প্রধান সহযোগী আব্বাসকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে হত্যাকাÐের পনের ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ রনির পিতা মো: লিটু শেখ এবং তার দুই ভাই ইমরান শেখ ও রুবেল শেখকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা রেবেকা বেগম বাদী হয়ে ৮জনকে আসামী করে শনিবার সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, আছিয়া একই গ্রামের এখলাছ শিকদারের মেয়ে। চার বছর আগে রনি শেখের সঙ্গে আছিয়ার বিয়ে হয়। তাঁদের আড়াই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাঁদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। শোনা যায় রনির অন্য মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক থাকার কারণে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে পারিবারিক কলহের জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রনি শেখের নিজ বাড়িতে তার বন্ধু ও সহকর্মী আব্বাস ফকিরের সহযোগীতায় আছিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করে। আঘাতে ঘাড় থেকে গলা অর্ধেক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আছিয়ার শরীরসহ বিছানায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। রনিদের বসতঘরের জানালা দিয়ে আগুন দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন এসে আগুন নেভান। এরপর দেখা যায় বিছানায় আছিয়ার গলাকাটা ও পুড়ে যাওয়া মরদেহ। বিছানার চাদর, তোষক, কাথা ও আছিয়ার গায়ের কাপড় পুড়ে গেছে।
নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোসা: সাদিরা খাতুন বলেন, পূর্বপরিকল্পিত এই বর্বর হত্যাকাÐের পেছনে থাকা আছিয়ার স্বামীসহ মামলার পাঁচ আসামীকে ঘটনার পনের ঘন্টার মধ্যে নড়াইল জেলা পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।